রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সকাল সন্ধ্যার দু’আ ও যিকির
দোয়া কবুলের পরীক্ষিত আমলআজকে আমরা এ হাদীসে আলোচনা করছি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সকাল সন্ধ্যার দু’আ ও যিকির। সকাল সন্ধ্যা তোমরা আল্লাহর প্রশংসায় তসবিহ পাঠ করো। যারা তাদের প্রতিপালকের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সকাল ও সন্ধ্যায় আল্লাহকে ডাকে তাদেরকে তুমি নিজের মজলিস থেকে বের করে দিও না।
এই আর্টিকেলে আমরা আরো আলোচনা করছি আপনি নিজেকে তাদের উৎসর্গে আবদ্ধ রাখুন, যারা সকাল সন্ধ্যায় তাদের পালনকর্তাকে তার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে আহবান করে। তওবা ইস্তেগফার দোয়া অর্থ সহ, আবু হুরায়রা রাযি এর প্রতি নবীজি সাঃ এর পাঁচ উপদেশ। এছাড়া আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিক বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়া অনুরোধ রইলো।
ভূমিকা
আল্লাহর ঘরগুলোকে উচ্চ মর্যাদা দিতে এবং আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে আদেশ করেছেন, তাতে সকাল ও সন্ধ্যা তাসবিহ পাঠ করে। এমন লোক, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বেচাকেনা আল্লাহ স্মরণ, নামাজ কায়েম ও যাকাত থেকে করতে গাফেল করতে পারে না।
সকাল-সন্ধ্যায় পঠিত দু'আ
সকাল-সন্ধ্যায় পঠিত দু'আ সম্পর্কে লিখিত কিতাবে এবং হাদীসের অন্যান্য কিতাবে অনেক দু'আ বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্যে বিশেষ জরুরী ও অর্থের দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কতিপয় দু'আর উল্লেখ করা হলোঃ
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
- উচ্চারণঃ বিসমিল্লা-হিল্লাযী লা- ইয়াযুরু মা'আসমিহী শাইউন ফিল আরযি ওয়া লা- ফিস- সামা-ই ওয়া হুয়াস সামী'উল 'আলীম।
- অর্থঃ আল্লাহর নামে; যার নামে শুরু করলে দুনিয়া এবং আসমানের কোন কিছুই ক্ষতি করতে। পারে না। তিনি সবকিছু শ্রবণ করেন এবং জানেন। (আবু দাউদ ৫০৮৮-সহীহ, তিরমিযী ৩৩৮৮- হাসান সহীহ, ইবনে মাজাহ ৩৮৬৯-সহীহ, জামে সগীর ৫৭৪৪, ৬৪২৬)
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ وَسُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ زِنَةَ عَرْشِهِ وَسُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ وَسُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ رِضَا نَفْسِهِ.
- উচ্চারণঃ সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী, 'আদাদা খালকিহী, ওয়া সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবিহামদিহী যিনাতা 'আরশিহী, ওয়া সুবহা- নাল্লা-হি ওয়াবিহামদিহী মিদা-দাদা কালিমা-তিহী ওয়া সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবিহামদিহী রিষা নাক্সিহী। (৩ বার)
- অর্থঃ আল্লাহর তাসবীহ ও হাম্দ ঐ পরিমাণ। যা তার সৃষ্ট জগতের সংখ্যা পরিমাণ হোক। আর তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা ও শুকরিয়া জ্ঞাপন তাঁর 'আরশের ওজন পরিমাণ হয় (যে 'আশের ওজন ও পরিধি সেই রাব্বুল 'আলামীন ব্যতীত কেউ অবগত নয়) আর তাঁর তাসবীহ এবং গুণগান ও শুকরিয়া তাঁর অগণিত 'ইল্ম পরিমাণ, আর তাঁর তাসবীহ ও হাম্দ ঐ পরিমাণ হোক যা দ্বারা তাঁর সন্তুষ্টি লাভ হয়। (মুসলিম ২৭২৬, আবু দাউদ ৫০৮৮, ইবনে মাজাহ ৩৮৬৯, তিরমিযী ৩৩৮৮, মিশকাত ২৩৯১)
তওবা ইস্তেগফার দোয়া অর্থ সহ
আরো পড়ুনঃ দোয়া কবুলের পরীক্ষিত আমল
হযরত শাদ্দাদ বিন আউস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এটি হল, সাইয়েদুল ইস্তিগফার-শ্রেষ্ঠ ইস্তিগফার। সন্ধ্যায় এ ইস্তেগফার পড়লে, ঐ রাতে মৃত্যু হলে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর সকালবেলা পড়লেও ওই দিন মারা গেলে সে জান্নাতে যাবে। সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার হল-
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي ، فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُالذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
সাইয়িদুল ইস্তিগফার বাংলা উচ্চারণ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা, খালাকতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়া'দিকা মাসতাতা'তু। আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু, আবুউ লাকা বিনি'মাতিকা আলাইয়্যা। ওয়া আবুউ বিজাম্বি ফাগফিরলি ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ্জুনুবা ইল্লা আনতা।
সাইয়েদুল ইস্তেগফার অর্থ সহ
অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি আমার রব, আপনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। আপনি জামাকে সৃষ্টি করেছেন, আমি আপনার গোলাম। আপনাকে দেয়া ওয়াদা-অঙ্গীকার পূরণ আমি সাধ্যমতো সচেষ্ট। আমি নিজের কৃতকর্মের অনিষ্টতা থেকে আপনার নিকট পানাহ চাই। আমার উপর আপনার সমুদয় অনুগ্রহ নিয়ে আমি হাজির, আমার পাপগুলো নিয়েও আমি হাজির। আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন, আপনি ব্যতীত কেউ তো আর ক্ষমা করতে পারবে না।
আবু হুরায়রা রাযি এর প্রতি নবীজি সা এর পাঁচ উপদেশ
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় নিম্নোক্ত দুআটি ১০০ বার পড়বে, কেয়ামতের দিন তার চেয়ে উত্তম কেউ থাকবে না। তবে হ্যাঁ, ঐ ব্যক্তি তার চেয়ে উত্তম হবে, যে এই পরিমাণ পড়েছে বা এরচে বেশি পড়েছে। দুআটি হল-
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ
- উচ্চারণঃ সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহি।
- অর্থঃ আমি সপ্রশংস আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি।
আরো পড়ুনঃ নামাজের কাফফারা কি
সুনানে আবু দাউদের বর্ণনায় আছে-
سُبْحَانَ اللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِحَمْدِهِ
- উচ্চারণঃ সুবাহানাল্লাহিল আজিম ওয়াবি হামদিহি।
- অর্থঃ আমি সংপ্রশংস মহান আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি।'
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকালে এ দুআ পড়তেন-
اللَّهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا وَبِكَ أَمْسَيْنَا، وَبِكَ نَحْيَا وَبِكَ نَمُوتُ، وَإِلَيْكَ النُّشُورُ
- উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা বিকা আসবাহনা, ওয়াবিকা আমসাইনা, ওয়াবিকা নাহইয়া, ওয়াবিকা নামুতু, ওয়া ইলাইকান নুশুর।
- অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনার অনুগ্রহে সকাল পেয়েছি, আপনারই অনুগ্রহে সন্ধ্যা পাবো। আপনার অনুগ্রহে বেঁচে আছি, আপনার ইশারায় মারা যাবো। আর আপনার কাছেই ফিরে যাব।
আর সন্ধ্যায় বলতেন-
اللَّهُمَّ بِكَ أَمْسَيْنَا، وَبِكَ نَحْيَا وَبِكَ نَمُوتُ، وَإِلَيْكَ النُّشُورُ
- উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা বিকা আমসাইনা, ওয়াবিকা নাহইয়া, ওয়াবিকা নামুতু ওয়া ইলাইকান নুশুর।
- অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনার অনুগ্রহে সন্ধ্যা পেয়েছি, আপনারই অনুগ্রহে সকাল পাবো।আপনার অনুগ্রহে বেঁচে আছি, আপনার ইশারায় মারা যাবো। আর আপনার কাছেই ফিরে যাব।'
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরের সময় শেষরাতে এ দুআ পড়তেন-
سَمَّعَ سَامِعُ بِحَمْدِ اللهِ وَحُسْنِ بَلَائِهِ عَلَيْنَا رَبَّنَا صَاحِبْنَا وَأَفْضِلُ عَلَيْنَا، عَائِذًا بِاللهِ مِنَ النَّارِ
- উচ্চারণঃ সাম্মাআ সামিউন বিহামদিল্লাহি ওয়া হুসনি বালায়িহি আলাইনা, রাব্বানা সাহিবনা, ওয়া আফজিল আলাইনা, আয়িজান বিল্লাহি মিনান্নার।
- অর্থঃ আমরা যে আল্লাহর প্রশংসা করছি এবং আল্লাহ আমাদেরকে বিপদমুক্ত রেখেছেন- উপস্থিতিরা যেন অন্যদের পৌঁছে দেয়। হে আল্লাহ, আমাদেরকে হেফাজত করুন, আমাদের উপর আপনার অনুগ্রহ নিয়মিত রাখুন। আমরা জাহান্নাম থেকে আপনার আশ্রয় কামনা করি।
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত- এক ব্যক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললো, গতরাত বিচ্ছু আমাকে দংশন করেছে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যদি সন্ধ্যায় নিম্নোক্ত দুআ পড়তে, তাহলে বিচ্ছু তোমার কোন ক্ষতি করতে পারত না। দুআটি হল-
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
- উচ্চারণঃ আউযু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাক।
- অর্থঃ আল্লাহর পরিপূর্ণ উক্তির মাধ্যমে তার সমস্ত সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় কামনা করি।
- -ইবনুস সুন্নি তার কিতাবে। এটা তিনবার বলার কথা বর্ণনা করেছেন।
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, আবু বকর রা. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে সকাল-সন্ধ্যার দুআ শিখিয়ে দিন। তখন রাসুল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি এ দুটি দুআ সকাল- সন্ধ্যা ও ঘুমানোর সময় পড়বে।
اللَّهُمَّ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ، عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، رَبِّ كُلِّ شَيْءٍ وَمَلِيْكَهُ أَشْهَدُ أَنا إِلَهَ إِنَّا أَنتَ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِي وَشَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ
- উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ফাতিরাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি, আলিমাল গাইবি ওয়াশ শাহাদাহ। রাব্বা কুল্লি শাইয়িন ওয়া মালিকাহু, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লা আনতা। আউজুবিকা মিন শাররি নাফসি, ওয়া শাররিশ শাইতানি ওয়া শিরকিহি।
- অর্থঃ হে আল্লাহ, আসমান-যমিনের স্রষ্টা, দৃশ্য-অদৃশ্যের হে মহা জ্ঞাতা, সকল বস্তুর মালিক ও প্রতিপালক! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ব্যাতীত কোন মাবুদ নেই। আমি নিজের কুপ্রবৃত্তির অনিষ্ট থেকে, শয়তানের অনিষ্ট এবং শিরিক থেকে আপনার আশ্রয় কামনা করছি টানা সামাজার কলেজ অপিচ ক্যাচ বাগাত তাছার।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সকাল সন্ধ্যার দু’আ ও যিকর
হযরত আবদুর রহমান বিন খুবাইব রা. থেকে বর্ণিত, আমরা এক বৃষ্টির রাতে, প্রচণ্ড অন্ধকারে জামাতে নামাযের জন্য রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খোঁজে বের হলাম। আমরা তাঁকে পেলে তিনি আমাকে বললেন, তুমি বলো। আমি কিছুই বললাম না। দ্বিতীয়বার বললেন, তুমি বল। আমি কিছু বললাম না।
আরো পড়ুনঃ আজান ও ইকামতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
তৃতীয়বার বললেন, তুমি বল। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ, কী বলব? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সকাল- সন্ধ্যা তিনবার 'সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস' পড়। তাহলে আল্লাহ তায়ালা তোমাকে সবকিছু থেকে হেফাজত করবেন।'
হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, সন্ধ্যায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দুআ পড়তেন-
أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلَّهِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ
- উচ্চারনঃ আমসাইনা ওয়া আমসাল মুলকু লিল্লাহ, ওয়াল হামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু।
- অর্থঃ আমরা সন্ধ্যায় উপনীত হয়েছি। পুরো সৃষ্টিজগত আল্লাহর জন্যে সন্ধ্যা উপনীত হয়েছে। সকল প্রশংসা আল্লাহরই জন্য। আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই।
বর্ণনাকারী বলেন, এর পর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিচের দুআটিও পড়তেন-বাণীর চর্মীকে জানতে চায় মহালের চকীয়।
لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، رَبِّ أَسْأَلُكَ خَيْرَ مَا فِي هُذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرَ مَا بَعْدَهَا، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهَا، رَبِّ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ، وَسُوءِ الْكِبَرِ، رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابٍ فِي النَّارِ، وَعَذَابِ فِي الْقَبْرِ
- উচ্চারণঃ লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। রাব্বি আসআলুকা খাইরা মা ফি হাজিহিল্লাইলাতি ওয়া খাইরা মা বা' দাহা। ওয়া আউজুবিকা মিন শাররি মা ফি হাজিহিল্লাইলাতি ওয়া শাররি মা বা দাহা। রাব্বি আউজুবিকা মিনাল কাসালি ওয়া সুয়িল কিবারি। আউজুবিকা মিন আজাবিন ফিমারি কীর্ত্যাদাতা ভাঙাস্তানে ওয়া আজাবিন ফিল কাবরি।
- অর্থঃ সকল প্রশংসা তাঁরই, সকল রাজ্যের মালিক তিনি, তিনিই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। এই রজনী ও এর পরবর্তী কল্যাণের কামনা করি। এই রাতের অকল্যাণ ও পরবর্তী অকল্যাণ থেকে আশ্রয় চাই। অলসতা, অতিশয় বার্ধক্য, কবরের আজাব ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাই।
অনুরূপভাবে সকালবেলায় তিনি পড়তেন-
أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ لِلَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ
- উচ্চারণঃ আসবাহনা ওয়াআসবাহাল মুলকু লিল্লাহ, ওয়াল হামদুলিল্লাহ, লা- ইলাহা ইল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু।
- অর্থঃ আমরা সকালে উপনীত হয়েছি। পুরো সৃষ্টিজগত আল্লাহর জন্যে সকালে উপনীত হয়েছে। সকল প্রশংসা আল্লাহরই জন্য। আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই।
হযরত আবু মালেক আশআরি রা. থেকে বর্ণিত আছে। সাহাবায়ে কেরাম সকাল, সন্ধ্যা ও ঘুমানোর সময় কী দুআ পড়বে এই মর্মে জিজ্ঞাসা করলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপরোল্লেখিত দুআ পড়তে বলেছেন। তবে উক্ত দুআর সঙ্গে নিচের অংশটি বেশি বলেছেন-
وَأَنْ تَقْتَرِفَ سُوءٌ عَلَى أَنْفُسِنَا أَوْ نَجُرَّهُ إِلَى مُسْلِمٍ
- উচ্চারণঃ ওয়া আন তাকতারিফা সুআন আলা আনফুসিনা, আউ নাজুররাহু ইলা মুসলিম।
- অর্থঃ পাপের মাধ্যমে নিজের উপর কিংবা কোন মুসলিমের উপর অবিচার করা থেকে।
হযরত উসমান বিন আফফান রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় নিম্নোক্ত দুআ তিনবার পড়বে, সে সব ধরনের বিপদাপদ থেকে মুক্ত থাকবে-
بِسْمِ اللهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ العَلِيمُ
- উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহিল্লাযি লা ইয়াদুররু মাআসমিহি শাইয়ুন ফিল আরদি, ওয়া লা ফিস সামায়ি, ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম।
- অর্থঃ আল্লাহর নামে সকাল/সন্ধ্যা শুরু করছি, যার নাম সঙ্গে থাকলে আসমান-যমিনের কোন কিছুই কোন ক্ষতি করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা-সর্বজ্ঞানী।
আরো পড়ুনঃ সারাদিনের দুআ ও যিকির সংক্রান্ত আলোচনা
আবু দাউদ শরিফে আরো আছে- 'সে হঠাৎ কোনো পেরেশানিতে পরবে না?
হযরত সাওবান রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সন্ধ্যাবেলায় নিম্নোক্ত দুআ পড়বে, আল্লাহ তাআলার দায়িত্ব সে ঐই হল, তাকে খুশি করা। দুআটি হল-
رَضِيْتُ بِاللهِ رَبَّا ، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا ، وَبِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِيًّا
- উচ্চারণঃ রাদিতু বিল্লাহি রব্বা, ওয়া বিল ইসলামি দীনা, ওয়াবি মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা নাবিয়্যা।
- অর্থঃ আমি আল্লাহ তাআলাকে রব হিসেবে, ইসলামকে দীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবি হিসেবে মেনে সন্তুষ্টি।
সকাল-সন্ধ্যায় ৪ বার এই দোয় পড়লে জাহান্নাম থেকে মুক্তি
হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় নিম্মোক্ত দুআটি একবার পড়বে, আল্লাহ তাআলা তার চার ভাগের একভাগ জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি দুইবার পড়বে আল্লাহ তাআলা তার অর্ধেক জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি তিনবার পড়বে, আল্লাহ তাআলা তার চার ভাগের তিন ভাগ মুক্ত করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি চারবার পড়বে আল্লাহ তাআলা তাকে পুরোপুরি জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেবেন। দুআটি হল-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَصْبَحْتُ أُشْهِدُكَ وَأُشْهِدُ حَمَلَةَ عَرْشِكَ، وَمَلَائِكَتِكَ وَجَمِيعَ خَلْقِكَ، أَنَّكَ أَنْتَ اللهُ لَا إِلَهَ إِنَّا أَنْتَ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُكَ وَرَسُوْلُكَ
- উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি আসবাহতু, উশহিদুকা ওয়া উশহিদু হামালাতা আরশিকা, ওয়া মালায়িকাতিকা ওয়া জামিআ খালকিকা, আন্নাকা আনতাল্লাহু, লা-ইলাহা ইল্লা আনতা, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুকা ওয়া রাসুলুক।
- অর্থঃ হে আল্লাহ, আমি সকাল করছি আপনাকে সাক্ষী রেখে, আপনার আরশ বহনকারীদের সাক্ষী রেখে, সমস্ত ফেরেশতা ও সমগ্র সৃষ্টিকে সাক্ষী রেখে, এই ব্যাপারে যে, আপনিই আল্লাহ। আপনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই। আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন আপনার বান্দা ও রাসুল।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url